পেটের উপরের ডানদিকের অংশে জ্বালাসমেত ব্যথা, বমি বমি ভাব, মাথাধরা, জ্বর, ডায়রিয়া, হলুদ প্রস্রাব হওয়া এসবই হল পিত্তথলির সমস্যার লক্ষণ। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে খাদ্যাভাসের জন্য গলব্লাডার স্টোন প্রায় সাধারণ রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাবার সহজে হজম না হওয়া, খেতে না পারা, এসবও পিত্তের দুর্বলতার লক্ষণ। পিত্তথলিকে তাই ভালো রাখতেই হবে। কারণ খাবার হজম করানোর জন্য প্রয়োজনীয় উৎসেচক পিত্তথলিই সরবরাহ করে। কীভাবে ভালো রাখবেন আপনার পিত্তথলিকে? তারই কিছু ঘরোয়া টোটকা রইল এই প্রতিবেদনে।
গলব্লাডারের সমস্যায় ভুগছেন? ঘরোয়া উপায়ে সামলাবেন কী করে? |
১। খাদ্যাভাস পরিবর্তন খাওয়াদাওয়ার উপর পিত্তথলির কর্মক্ষমতা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করে।আপনি যত বেশি ফ্যাট জাতীয় খাবার খাবেন, ততই তা পিত্তথলির উপর চাপ সৃষ্টি করবে। তাই এবার থেকে এড়িয়ে চলুন ফ্যাট জাতীয় খাবার। এইধরনের খাবার আপনার রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় যা পিত্তথলির পক্ষে ক্ষতিকারক জিনিস। বাদাম, বিনস, টকজাতীয় ফল, মাছ, অলিভ তেল ইত্যাদি জাতীয় খাবার আপনার তালিকায় রাখুন বেশি করে। রক্তে ভিটামিন সরবরাহের কাজটি করে থাকে পিত্তথলি । ফলে পিত্তথলিতে সমস্যা দেখা দিলে আপনার শরীরে ভিটামিনের লেভেলেও তার প্রভাব পড়বে। আপনার খাবারের রুটিনে রাখুন বেশি পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, যা খাবার হজমের কাজে সাহায্য করে। এতে উপকার হবে আপনার পিত্তথলির।
গলব্লাডারের সমস্যায় ভুগছেন? ঘরোয়া উপায়ে সামলাবেন কী করে? |
২। ব্যায়াম করুন নিয়মিত: নিয়মিত ব্যায়াম পিত্তথলির যে কোনওরকমের সমস্যা থেকে আপনাকে দূরে রাখবে। আসলে আমাদের অতিরিক্ত ফ্যাট জমলেই তা ক্ষতি করে পিত্তথলির। তাই ব্যায়াম করে ফ্যাট ঝরান। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের মতে দিনে অন্তত ২০ মিনিট ব্যায়াম করা প্রয়োজন। যত ঘাম ঝরাবেন ততই রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমবে ফলে পিত্তথলির মধ্যে পাথর হওয়ার সম্ভাবনাও কম।
গলব্লাডারের সমস্যায় ভুগছেন? ঘরোয়া উপায়ে সামলাবেন কী করে? |
৩। কাঁচা হলুদ খান পেটের উপরের ডানদিকের অংশে ব্যথা অনুভব করলে খান কাঁচা হলুদ। অনেক সময় দেখা যায় খুব সিরিয়াস কিছু না হলেও পিত্তথলির ক্ষতি হতে শুরু হয়েছে। জ্বালাসমেত হওয়া ব্যথা কমাতে হলে কাঁচা হলুদ খুবই কাজ দেয়। কাঁচা হলুদে থাকা কারকুমিন নামক পদার্থটি জ্বালা ও ব্যথা দুইই কমাতে কার্যকরী। চায়ে দিয়ে এই হলুদ খেতে পারেন। পিত্তরস তৈরি করতেও হলুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। পিত্তরস না তৈরি হলে খাবার হজম হওয়া সম্ভব নয়।
গলব্লাডারের সমস্যায় ভুগছেন? ঘরোয়া উপায়ে সামলাবেন কী করে? |
৪। গরম সেঁক দিন পেটের ওই নির্দিষ্ট অংশে ব্যথা হলে পরিস্কার কাপড় গরম জলে ভিজিয়ে ওই অংশে সেঁক দিতে পারেন। অনেকে হটব্যাগ ব্যবহার করেন সেঁক দেওয়ার জন্য যা একইরকম কাজ দেয়। একইভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে হটপ্যাড যা ইলেকট্রিকের সাহায্যে গরম করা যায় ও ব্যথার অংশে সেঁক দেওয়া যায়।
গলব্লাডারের সমস্যায় ভুগছেন? ঘরোয়া উপায়ে সামলাবেন কী করে? |
৫। পিপারমিন্ট চা পিপারমিন্ট চা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। পেটের ব্যথা , মাথার ব্যথা দূর করতে এটি অত্যন্ত কাজ দেয়। গলব্লাডারে ব্যথা হলে সে ব্যথা কমাতে আপনি নিয়মিত খেতে পারেন পিপারমিন্ট চা। এর একটি ঠান্ডা প্রভাব আছে যা আপনাকে ব্যথা ভুলে থাকতে সাহায্য করবে।
গলব্লাডারের সমস্যায় ভুগছেন? ঘরোয়া উপায়ে সামলাবেন কী করে? |
৬। আপেল সাইডার ভিনিগার আপেল সাইডার ভিনিগারও ব্যথা দূর করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কাজ দেয়। এটি খুব কম দামেই বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। অথবা চাইলে তৈরি করে নিতে পিরেন বাড়িতেই। অল্প গরম জলে দুই চামচ এই ভিনিগার মিশিয়ে অল্প অল্প করে খেতে থাকুন। এটা সরাসরি খেলে এর অ্যাসিড আপনার শরীরের ক্ষতি করতে পারে। তাই গরম জলে মিশিয়েই খান। দেখবেন ব্যথা ও জ্বালা দুইই কমে গেছে।
0 comments:
Post a Comment